আমাদের ডেস্ক


উমা ব্যানার্জী – উপাধ্যক্ষ

অবিভক্ত বাংলার প্রথম সাংস্কৃতিক-সঙ্গীত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ১০আগস্ট, ১৯৪০। মাত্র ৬টাকা সম্বল করে সাকুল্যে আটজন ছাত্রীকে নিয়ে যাত্রা শুরু। ৬টাকায় ছাপানো হয়েছিল অ্যাডমিশান ফর্ম। শুরু হয়েছিল দক্ষিণ কলকাতার ৪, হিন্দুস্থান রোডের মুরলীধর বালিকা বিদ্যালয়ে। সেসময় নাম ছিল বালিগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়। সঙ্গীতাচার্য ননীগোপাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মহতী উদ্যোগের সহযোগিতায় ছিলেন ড. স্নেহময় দত্ত, বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ মনীন্দ্র চন্দ্র চক্রবর্তী, প্রয়াত ক্ষিতিশ চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই শুরু পথ চলা।

আজ পঁচাত্তর বছরের ঐতিহ্যের সরণি বেয়ে শতবর্ষের অভিমুখে — বেঙ্গল মিউজিক কলেজ। দীর্ঘ সাত দশক। বহু কৃতী, যশস্বী ছাত্রছাত্রী। সুচিত্রা সেন, সুমিত্রা সেন, পূর্বা দাম। তালিকা দীর্ঘ। শিক্ষক ছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়, পূরবী দত্ত, অখিলবন্ধু ঘোষ প্রমুখ।

১৯৫৬, বেঙ্গল মিউজিক কলেজ লাভ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন। এই অনুমোদনের পরে বেঙ্গল মিউজিক কলেজ দু’টি স্বতন্ত্র, কিন্তু সহযোগী বিভাগ হিসেবে গড়ে ওঠে। একটি স্নাতক স্তরের পাঠ্যক্রম, অন্যটি ডিপ্লোমা পাঠ্যক্রম। নব অনুমোদিত বিভাগটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ হিসেবে, অন্যটি সাধারণ বিভাগ রূপে পরিচালিত হয়।

১৯৬১, কলেজ সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন আইনে গঠিত হয় বেঙ্গল মিউজিক কলেজ সোসাইটি। কলেজের দু’টি বিভাগই তখন পরিচালনা করত সোসাইটির পরিচালনা কমিটি। ওই সময়ই, সি আই টি থেকে পাওয়া জমিতে সোসাইটি তৈরি করে আজকের কলেজ ভবন। ১৯৭৮, স্নাতক স্তরের পাঠ্যক্রমটি সরাসরি নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। তারপর থেকে, অতীতের মতো বেঙ্গল মিউজিক কলেজে রয়েছে শিল্প-সংস্কৃতির নানা ক্ষেত্রের ডিপ্লোমা পাঠ্যক্রম।

নামে ‘মিউজিক কলেজ’ হলেও, এটি আসলেই একটি পূর্ণাঙ্গ সাংস্কৃতিক শিক্ষাঙ্গন। সঙ্গীতের সবক’টি বিভাগ ছাড়াও অঙ্কন, নৃত্য ও বিভিন্ন যন্ত্রানুসঙ্গ শেখার প্রথম ও অগ্রণী প্রতিষ্ঠান।

এই মুহূ্র্তে দিল্লি থেকে শিলচর, শান্তিনিকেতন থেকে ঝাড়গ্রাম— রয়েছে কলেজের ৮৫টি অনুমোদিত কেন্দ্র, যাতে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১০,০০০’র বেশি।

০৩-০৬-২০১৭