সুচিত্রা সেন
সুচিত্রা সেন কেন বেঙ্গল মিউজিক কলেজে যেতেন?
উনিও গান শিখতে যেতেন। একদিন বললেন, তুমিও তো ওখানেই যাও, চলো একসঙ্গে যাই। সুচিত্রা সেন তখনও রাস্তায় নামলে মবড্ হয়ে যেতেন না। কিন্তু খুব গল্প হত। ‘গৃ্হদাহ’ আর ‘স্মৃতিটুকু থাক’-এ ওর লিপেই তো গাইলাম। পথ চলার সেই বন্ধুতা ও কিন্তু মনে রেখে দিয়েছিল। একবার ইন্দ্রপুরী স্টুডিয়োতে আমি আর জর্জদা (দেবব্রত বিশ্বাস) গিয়েছি ঋত্বিক ঘটকের ‘কোমল গান্ধার’ ছবিতে গান গাওয়ার জন্য। হঠাৎ দেখি সুচিত্রা যাচ্ছে। আমি ভাবছি অনেক দিন যোগাযোগ নেই। আমাকে হয়তো চিনতে পারবে না। তা’ও ঘর থেকে বাইরে এলাম। ভাবলাম ওঁকে তো দেখি। একটু চোখে চোখ পড়তেই ও এগিয়ে এল। বলল, কেমন আছ? গান কেমন চলছে? কিন্তু মোটা হয়ে গেছ তো! আমি বললাম, তুমি যে আমার সঙ্গে কথা বলবে ভাবতেই পারিনি। তাতে লাবণ্য ঝরা মুখ নিয়ে ও বলল, ওমা! সেই পথেই তো গান শিখতে গিয়ে আমরা বন্ধু হয়েছিলাম, ভুলে গেলে? এদিকে জর্জদা তো চেঁচামেচি জুড়েছেন। বললাম, সুচিত্রা সেনের সঙ্গে দেখা হল। জর্জদা চমকে বললেন, ‘অ্যাঁ!! কী কইতাসেন! একটু ডাকলেন না আমারে?’ আমি বললাম, ‘সত্যি এটাই পারলাম না।’ আসলে আমি বরাবরই আড়ষ্ট। অ্যাগ্রেসিভ ছিলাম না তো! আমার স্বামীও ছিলেন সঙ্গে। খুব আফশোস করেছিলেন। সুচিত্রা সেনকে না দেখতে পাওয়ার আফশোস। আর সেটা তো হওয়ারই কথা!
আনন্দবাজার পত্রিকা। ৯ আগস্ট, ২০১৪।